শিশুদের হৃদরোগ | Heart Disease in Kids

 

শিশুদের জন্মগত হৃদরোগের কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

শিশুরাও হৃদরোগের শিকার হতে পারে। তাই বিপদের আগেই জেনে নিন শৈশবের হৃদরোগের একাধিক লক্ষণ সম্পর্কে।


হার্ট আমাদের শরীরের পাম্প কাজ করে থাকে। এই হার্ট সারা শরীরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ রক্ত প্রবাহ করে থাকে। ফলে শরীরের কোষগুলো তা খেয়ে বেঁচে থাকে। তাই সুস্থ জীবনযাপন করতে চাইলে হার্টের যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি।


কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, আজকাল জন্মগত কারণে হোক বা অন্য কোনো কারণে শিশুরাও হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রত্যেক শিশুর বাবা-মাকে শিশুদের হার্টের সমস্যার একাধিক লক্ষণ সম্পর্কে জানার পরামর্শ দেন। তারা বলছেন, এই কৌশলেই বড় বিপদ ঘটার আগেই যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।


তাই, আপনি যদি চান আপনার সন্তান ভালো থাকুক, আর দেরি না করে শিশুদের হৃদরোগের কিছু লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন এই প্রতিবেদন থেকে। এর পরে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। শুধুমাত্র এই কৌশলই শিশুকে মারাত্মক বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।

শিশুর জন্মগত হৃদরোগের লক্ষণ | হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ

রোগীর বয়স অনুযায়ী উপসর্গের তারতম্য হয়, হৃদপিণ্ডের কত অংশ আক্রান্ত হয়, কতটা গুরুতর ইত্যাদি। যেমন, সায়ানোসিসের ক্ষেত্রে ত্বক, জিহ্বা, নখ নীলচে হয়ে যায়। তাই একে 'ব্লু বেবি সিনড্রোম' বলা হয়। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। অ-সায়ানোসিসের ক্ষেত্রে, প্রায়শই কোন দৃশ্যমান লক্ষণ থাকে না। তবে শ্বাসকষ্ট, শ্বাসকষ্ট, ক্লান্তি, দুর্বল নাড়ির হার, দীর্ঘক্ষণ ঘুম, ওজন না বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি জন্মগত হৃদরোগের সাধারণ লক্ষণ। অস্বাভাবিক রক্ত প্রবাহের কারণে স্টেথোস্কোপে হার্ট লিক হওয়ার সাথে সাথে প্রায়ই হার্ট মুরমার (হার্ট মুরমার) হয়।

১। হঠাৎ হঠাৎ করে মুখ খুলে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে

২। আচমকাই ঘেমে গিয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস নিচ্ছে

৩। মাড়ি ও জিভ নীল হয়ে গিয়েছে

৪। খুব ছটফট করছে

৫। অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে ইত্যাদি।


একটু বড় বয়সি শিশুর হৃৎপিণ্ডে কোনও সমস্যা থাকলে এইসব লক্ষণের দেখা মিলতে পারে-

১. অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে শরীরিক সক্ষমতায় পেরে উঠছে না

২. সমবয়সিদের থেকে আগেই হাঁফিয়ে উঠে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে

৩. কোনও কারণ ছাড়াই ঘেমে নেয়ে স্নান করে যাচ্ছে

৪. জিভ ও মাড়ি নীল হয়ে গিয়েছে

৫. অত্যন্ত দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ছে ইত্যাদি।


১০ বছর বা তার বেশি বয়সি বাচ্চারা হৃৎপিণ্ড সমস্যার কবলে পড়লে তাদের শরীরে এইসব লক্ষণ দেখা দেয়-

১. এক্সারসাইজ করার সময় দ্রুত হাঁফিয়ে উঠছে

২. হঠাৎ করেই বুক ধড়ফড় করছে

৩. বুকে ব্যথা হচ্ছে

৪. সমবয়সিদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে পেরে উঠছে না

৫. অল্পতেই ঘেমে নেয়ে স্নান করে যাচ্ছে

৬. হঠাৎ করই অজ্ঞান হয়ে পড়ছে ইত্যাদি।

জন্মগত হৃদরোগ নির্ণয়

জন্মের আগে একটি ভ্রূণের ইকোকার্ডিওগ্রাম ভ্রূণের যে কোনও হার্টের সমস্যা সনাক্ত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। সায়ানোটিক প্রসবোত্তর 'নীল-শিশুদের' ক্ষেত্রে, বাহ্যিক পর্যবেক্ষণ ছাড়াই পালস অক্সিমেট্রিতে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপ করে সমস্যাটি নিশ্চিত করা যেতে পারে।


বুকের এক্স-রে, ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম, ইকোকার্ডিওগ্রাম সাধারণত হার্টের সমস্যা নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। করোনারি এনজিওগ্রাফি দেখায় যে হৃৎপিণ্ড সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে পারছে কি না। প্রয়োজনে হার্টের ছবি তোলার জন্য এমআরআই করা হয়।

জন্মগত হৃদরোগ এবং এর চিকিৎসা

হৃদরোগে শুধু বয়স্করাই আক্রান্ত হয় না, শিশুরাও আক্রান্ত হতে পারে। তবে এটি সাধারণত জন্মগত ত্রুটির কারণে হয়ে থাকে। জন্মের আগে বা পরে শিশুর হার্টে এই সমস্যা শনাক্ত করা যায়। কখনও কখনও জন্মগত হৃদরোগ কয়েক মাস বা পরে নির্ণয় করা হয়। সমস্যা যখনই ধরা পড়ুক না কেন, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ বেশিরভাগ হার্টের সমস্যা নিরাময়যোগ্য।


চিকিৎসকদের মতে, এসব সমস্যা একবারে ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। এই ভুল করা পরিবারের একটি ছোট সদস্যের জীবন নিয়ে টানাটানি পড়তে পারে। বরং এই পরিস্থিতিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি আপনার সন্তানের লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করার পরে একটি ইসিজি বা ইকো সুপারিশ করতে পারেন। আর এই দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ পাওয়া যায়। তবেই চিকিৎসা শুরু হবে। 


পোস্টটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন